সালমানের মৃত্যু ও পিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে যা বললেন সামিরা

ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক উজ্জল নক্ষত্রের নাম সালমান শাহ। যিনি তার অল্প দিনের ক্যারিয়ারে জয় করে নিয়েছিলেন কোটি মানুষের মন। যা আজও দৃশ্যমান। গত সোমবার সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। যেখানে উঠে এসেছেন জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের নামও। তবে পিবিআই দেওয়া প্রতিবেদন খুব একটা আনন্দেরও না, আবার বেদনারও না বলে জনিয়েছেন তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক।

তিনি বলেন, শুরু থেকেই বলে আসছি ইমন (সালমান শাহ) আত্মহত্যা করেছে, আগে যা বলেছি সেটাই পিআইবির প্রতিবেদনে আবার উঠে এসেছে। প্রতিবেদন প্রকাশের একদিন পর একাধিক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন সামিরা।

তিনি আরও বলেন, ইমনের ঘটনা আমার চেয়ে তো কেউ ভালো জানবে না। আমার পরিবারের কথা আমিই তো ভালো জানব। আমি যা জানি সেটা বলে এসেছি এতদিন। সেটাই আবার পিআইবি তদন্ত করে জানাল। পিবিআইর প্রতিবেদনে নতুন করে সালমান শাহর সঙ্গে শাবনূরের ঘনিষ্ঠতার কথা বলা হয়েছে। একদিন ডাবিং রুমে সালমান শাহর সঙ্গে শাবনূরকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেন সামিরা। বিষয়টি নিয়ে সামিরা সমকালকে বলেন, শাবনূরের বয়স তখন অনেক কম। আমাদের বাসায় নিয়মিত আসত। সালমান শাহকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকত। খুব বেশি সালমানের সঙ্গে মিশত, এটা আমার ভালো লাগত না। পৃথিবীর কোনো স্ত্রীরই এটা ভালো লাগার কথা নয়। আমারও লাগেনি। শাবনূরের বার বার সালমানের কানের কাছে মুখ নিয়ে কথা বলা দেখে আমার খারাপ লাগত।

সামিরা আরও বলেন, এরপর সালমান আমার কাছে ওয়াদা করে শাবনূরের সঙ্গে আর ছবি করবে না। যেগুলো চুক্তিবদ্ধ হওয়া আছে সেগুলো শেষ করবে কেবল। তবে সেই সব ছবির শুটিং ও ডাবিংয়ে আমাকে নিয়ে যাবে। এমনিতেই সালমানের শুটিংয়ে আমার থাকা হতো। কারণ ওর ড্রেস ডিজাইনার ছিলাম। এরপর শাবনূরের সঙ্গে সব ছবিতেই শুটিংয়ে যেতাম। শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও সেখান থেকে সালমান ফিরে এসেছিল। তার সঙ্গে আর ছবি করবে না, সেটা তো সে সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে জানিয়েও দেয়।

পিবিআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামিরাকে না বলে গোপনে ডাবিং করতে যান সালমান ও শাবনূর। এ কথা অস্বীকার করে সামিরা বলেন, এটা আমাকে সকালে জানিয়েই গিয়েছিল। আমাকে যেতে বললে আমি বলেছিলাম তুমি যাও পরে আসছি।

তবে সালমান শাহর আত্মহত্যাকে খুন বলে চালানোর চেষ্টা করেছে সালমানের পরিবার। আর সেটা সামিরার ওপর চাপাতেও চেষ্টা ছিল বলে দাবি তার। কারণ সালমানের সম্পদের প্রতি যেন কোনো দাবি না করতে পারেন সামিরা, এমনটিই জানান তিনি।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের বাসা থেকে সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। সামিরা এখন তিন সন্তানের মা। ১৯৯৯ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে তিনি বিয়ে করেন সালমান শাহর বন্ধু মোস্তাক ওয়ায়েজকে।

২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর আলোচিত এ মামলাটি তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দেন পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম।

পিবিআই এর এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি, তিনি পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন